দেওঘর(Deoghar) tour plan


১> অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম----- খুব শান্তির যায়গা। সংগ্রহশালা টা দেখবার মতো। আমি সেই অর্থে এরকম কোন ঠাকুরের ভক্ত না হয়েও বলছি প্রত্যেকের একবার এখানে যাওয়া উচিৎ...।
অনুকূল ঠাকুর ১৯৪৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাবনা থেকে রওনা হয়ে ২ সেপ্টেম্বর বিহারের দেওঘরে চলে এলেন। শ্রীশ্রী বড়দার ব্যবস্থাপনায় বড়াল বাংলোতে উঠলেন। ক্রমে দেওঘর বৈদ্যনাথের বুকে গড়ে উঠলো দেওঘর সৎসঙ্গ আশ্রম_ বিরাট সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। বড়াল বাংলোতে প্রথমে উঠলেন। আশ্রমের ঘর-বাড়ি। আসবাবপত্র কারখানা শুরু হল। সৎসঙ্গ মুখপাত্র বাংলা 'আলোচনা', হিন্দি সাত্বতী, ইংরেজি খরমধঃব এবং শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী সংবলিত শতাধিক পুস্তক মুদ্রণ পরিকল্পনায় সৎসঙ্গ প্রেস। রসৈযনা মন্দির, দ্যুতদীপ্তি হাসপাতাল, কার্য পরিচালনায় ফিলনথ্রপি অফিস, তপোবন বিদ্যালয়, বীণাপাণি বিদ্যামন্দির, অমরদ্যুতি মহাবিদ্যালয়, বিশাল মেকানিক্যাল ওয়ার্কস ও গ্যারেজ। বড় বড় অতিথিশালা। প্রসাদ গ্রহণের জন্য আনন্দবাজার। উৎসব অনুষ্ঠানের জন্য রিভলভিং স্টেজ, উৎসব প্যান্ডেল। যতি আশ্রম, চিড়িয়াখানা, মেমোরিয়াল প্রভৃতি। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত আছে শা-িলা বিশ্ববিদ্যালয়, গঙ্গা দাড়োয়া পরিকল্পনা।
২> নওলাখা মন্দির --
কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা রাজবাড়ির রাণী চারুশিলা এই মন্দিরটি তৈরি করান । ন'লাখ টাকা দিয়ে তৈরি হয়েছিল বলে এর এই নাম । কিছুটা বেলুড়মঠের আদলে তৈরি এই মন্দিরে গোপাল আর রাধাকৃষ্ণের মূর্তি আছে । সিঁড়ি দিয়ে উঠে মন্দিরের চত্বরটা খুব বড় আর চারপাশটা খোলা বলে খুব সুন্দর ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছিল (আমাদের দলের কেউ কেউ তো বলল আর সাইট সিয়িং-এ যাওয়ার দরকার নেই, এখানেই বিকেল পর্যন্ত বসে থাকি !) । মন্দিরে কোনও ভীড় নেই, নিজের ইচ্ছেমতো সময় নিয়ে দেখা যেতে পারে ।
৩> বালানন্দ আশ্রম------ গুরু বালানন্দ ব্রহ্মচারীর আশ্রম এটি।
৪> নন্দন পাহাড়—গেট বন্ধ থাকায় সেভাবে ভেতরে ঢোকা যায়নি।
৫> তপোবন পাহাড়----
দেওঘর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত তপোবন পাহাড় । আমরা পৌঁছলাম তখন বেলা সাড়ে এগারোটা । নামার পর আমরা তপোবন পাহাড়ে চড়তে শুরু করলাম । পাহাড়ের ধাপে ধাপে নানারকম মন্দির রয়েছে । ওঠা-নামার সময়ে সবসময়েই সেখানে পয়সা দেওয়ার জন্য বলতে থাকে । সেগুলো না দিয়েও অনায়াসে যাওয়া যায়, কিন্তু এখানকার বাঁদরের থেকে সাবধান ! এখানকার (ট্রেনিংপ্রাপ্ত) বাঁদররা খুব ক্ষিপ্রতার সঙ্গে যাত্রীদের হাতে থাকা ছোটখাটো জিনিস, যেমন সানগ্লাস, ক্যামেরা, মোবাইল ইত্যাদি নিয়ে নেয় । আবার তাদের সঙ্গে থাকা দুপেয়ে বাঁদররা হাতে ছোলা-কলা নিয়ে বসে থাকে, যদি কোনওভাবে সেই ছোলা-কলায় হাতও লেগে যায়, তাহলেও তারজন্য পয়সা দিতে হবে ।এখানে আমায় একটা বাচ্চা হনুমান জড়িয়ে ধরেছিল। আর তার পাশে একজন ছোট্ট ছোট্ট বড়া 10টাকা করে নিতে বাধ্য করছিল তাও আবার 4 টে। ধমক দিয়ে একটা নিয়ে হনু ব্যাটা কে দিয়ে নিস্তার পেয়েছি। খুব সাবধানে। তাই তপোবনে সর্বস্তরের বাঁদরদের থেকে সাবধান ।আমরা পাহাড়ের ধাপে ধাপে উঠে একেবারে মাথায় চলে গেলাম । এখান থেকে চারদিকের দৃশ্য খুবই মনোরম আর একটা ঠান্ডা হাওয়া সারাক্ষণ দিতে থাকে বলে দুপুরের প্রখর রোদেও খুব গরম লাগে না ।বিশেষ করে রামায়ণ এর সীতা হরণ কালের সাথে এই পাহাড় জড়িত।
তপোবন পাহাড় থেকে নামার রাস্তাটা সবথেকে বেশি রোমাঞ্চকর । চাইলে সিঁড়ি দিয়ে ভদ্রভাবে নেমে আসা যায়, আবার চাইলে পাহাড় ভেঙ্গে বিপদের ঝুঁকি নিয়েও নামা যায় । পাহাড়ের একেকটা ছোটো ছোটো খাঁজ দিয়ে পুরো শরীরটাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়ার মধ্যে একটা অদ্ভুত আনন্দ আছে । একটা জায়গা আবার ভীষণ ঢালু । সেখান দিয়ে নামার সময়ে খুব সাবধানে নামতে হয় কারণ কোনওকারণে পা-হড়কালে ... না মৃত্যু নয়, তবে বেশ ভালোরকম জখম হওয়ার সম্ভাবনা । একেকটা জায়গায় গিয়ে মনে হয় "আর এগোতে পারব তো ?" আমরা কিন্তু কোনও গাইড নিইনি -- নামার সময়ে অন্য ট্যুরিস্টের দল এর গাইড আমাদের সঙ্গে ছিল । বিশেষত হনুমান মন্দিরের পর পথ খুঁজে পাওয়া কঠিন । যখন নেমে এলাম, তখন বেশ উত্তেজিত লাগছিল । একটা কথা অবশ্যই বলব ব্যাপারটা যে খুব কঠিন তা নয়, তবে করার জন্য মনের জোরের দরকার আছে আর গাইডের দরকার ও আছে।
৬>-- ত্রিকূট পাহাড়
দেওঘর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ত্রিকূট পাহাড়ের বৈশিষ্ট্য হল এটা দেওঘরের সবথেকে উঁচু জায়গা । এর উচ্চতা ১,৫০০ ফুট । চাইলে ট্রেকিং করে এর ওপরে ওঠা যায়, তবে এখনকার দিনে রোপওয়ে হয়ে যাওয়ায় সেভাবে ওঠার আর কোনও মানে হয় না । ওঠানামা মিলিয়ে মাথাপিছু ১১৫ টাকার টিকিটে ত্রিকূট পাহাড়ে উঠতে সময় লাগে মিনিট দশেক । রোপওয়েতে এই জার্ণিটা ভয়ঙ্কর সুন্দর । রোপওয়ে যখন ওপরের দিকে ওঠে, তখন পায়ের অনেক তলায় পাহাড়ের নিচের দিকটা দেখতে দারুণ লাগে । মাথায় ওঠার পর হেঁটে এদিক-ওদিক ঘুরে আসা যায় । ত্রিকূট পাহাড়ের ওপর থেকে দেওঘরের দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম । এখানে গাইড নেওয়া খুব দরকার বলেই আমি মনে করি। এক ঘন্টা পাহাড়ের মাথায় হাঁটাহাঁটি করে আমরা নেমে একই পথে নেমে এলাম । ত্রিকূট পাহাড়ে গেলে এই রোপওয়েটা অবশ্যই চড়া উচিৎ । এটা একটা বেশ দারুণ অভিজ্ঞতা যেটা কলকাতার সায়েন্স সিটি বা নিক্কোপার্কের রোপওয়েতে হবে না !
 Tour plan prepared by::
Subhabrata Sanyal


বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমাদের Facebook Group "Cholun Berie Asi ( Let's Go & Enjoy Nature )"  join করুন

2 comments:

  1. চলুন বেড়িয়ে আসি তপোবন ,দেওঘর একুপাহাড়

    ReplyDelete
  2. 2দিন 3রাতের জন্য। তারিখ= জানুয়ারী
    14/01/2022 -16/01/2022
    চলুন বেড়িয়ে আসি
    তপোবন দেওঘর একুপাহাড়

    ReplyDelete

Powered by Blogger.